নিজের পোড়া দোকানের অংশে দাঁড়িয়ে ‘আমিতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, তাহলে আমার দোকান পুড়ল ক্যান’ এভাবেই কেঁদে ওঠেন বায়তুল মোকারম এলাকার হকার কবীর হোসেন।
হেফাজতে ইসলাম রোববার বায়তুল মোকারম এলাকার প্রায় সব হকারের দোকানেই আগুন দিয়েছে। নিঃস্ব হয়ে গেছেন ১৭৫ জন হকার। তাদেরই একজন কবীর হোসেন আজ তার পুড়ে যাওয়া দোকানের ওপর দাঁড়িয়ে অনবরত আহাজারি করতে থাকেন।
অশ্রু সজল নয়নে কবীর হোসেন বলেন, ওরা আমার দোকান পুড়ে নাই, পুড়ছে কপাল। আমিতো দোকান বন্ধ কইরা সকাল দশটায়ই চইলা গেছি, তাহলে আমার দোকানে আগুন দিল কেন। আমিতো রাজনীতি করি না। আমিতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরি। মুসলমানের বাচ্চা।
কবীর হোসেনের একার আয়ে চলতো তার পাঁচ ভাইবোন। দোকান পুড়ে গেছে। এখন কিভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে আর ভাবতে পারে না কবীর হোসেন।
এ শুধু একা কবীর হোসেনে নয়, ১৭৫ জন হকারেরই একই অবস্থা। একই জায়গায় ওসমান গণি নামক হকারের দুটি দোকান পুড়ে যেন বাতাসে মিলিয়ে গেছে। আছে শুধু। ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৩ লাখ টাকা। মাথায় হাত। আর কমাস পরেই রোজা। কি করে হবে আবার গণির দোকান।
ওসমান গণি বলেন, আপা ভাইবোন সন্তান সবাইর মুখের খাওন যোগাইতে হয় আমার একার। আর আমি তা যোগাইতাম এ দোকান দুইটা থেইকা। সামনে রোজা। পূঁজি পামু কত্থেইকা? আমাগো দোষটা আছিল কি?
কবীর হোসেন বায়তুল মোকারমে এ জায়গায় ১৫ বছর ধরে ব্যবসায় করছেন। তিনি বলন, এখানে ২৫০টি দোকান ছিল। এর মধ্যে ১৭৫টি দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব দোকানে সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মাল ছিল। যার এক বিন্দু এখন বেঁচে নেই। আমার দোকানেই শুধু ৯০০ শার্ট ছিল। এসব প্রতিটি শার্টের মূল্য ছিল আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা। আরও ছিল প্যান্ট ও গেঞ্জি ছাড়াও বেশ কিছু পোশাক।