অনেকে ইরান, সউদী, ইরাক, সিরিয়া, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান-এর বিভিন্ন স্ট্যাচুর উদাহরণ দেয়। অথচ কোনো দেশ, কোনো ব্যক্তি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দলীল নয়। মুসলমান উনাদের দলীল পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ। কোনো দেশ কিংবা ব্যক্তি যদি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিলাফ কাজ করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নামে চালিয়ে দেয়, তাহলে সে দায় একান্ত তার, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নয়। সে যেসব দেশের উদাহরণ দিয়েছে সেসব দেশে পবিত্র ইসলাম উনার খিলাফ অনেক কাজই হয়। এখন তাদের তা-ই কি গ্রহণ করতে হবে? যেমন- এসব দেশেও শরাব খাওয়া হয়, জুয়া খেলা, বেপর্দা হয়, গান-বাজনা ইত্যাদি হারাম কাজ হয়। এখন কি মুসলমান তা অনুসরণ করবে? আবার বিডি-প্রতিদিন.কম এসব দেশের উদাহরণ দিয়ে মূর্তি জায়িয করতে চেয়েছে। তাহলে এসব দেশে তো শরীয়া আইনও চালু আছে। তাহলে বাংলাদেশেও শরীয়া আইন চালু করে দিক।
মুসলমান তা-ই অনুসরণ করবেন যা শরীয়তে বলা আছে। এর বাইরেও যাওয়া কিংবা মত দেয়ার অধিকার কাউকে দেয়া হয়নি। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি পূর্ববর্তী ওহী মুবারক দ্বারা নাযিলকৃত সমস্ত দ্বীন এবং অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে মানবরচিত সমস্ত মতবাদ রদ করে এবং তাদের উপর প্রাধান্য দিয়ে উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সত্য দ্বীন ও হিদায়েতসহ পাঠিয়েছেন; উনার সাক্ষী হিসেবে মহান আল্লাহ্ পাক তিনিই যথেষ্ট।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ- ৩৩
মহান আল্লাহ পাক তিনি পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ উনাদের প্রতি নাযিলকৃত তিনখানা কিতাব- তাওরাত শরীফ, যাবূর শরীফ, ইন্জীল শরীফ এবং একশ’খানা ছহীফা শরীফ উনাদের হুকুম এবং পূর্ববর্তী, মধ্যবর্তী বা বর্তমান ও পরবর্তী মানবরচিত সমস্ত মতবাদ বাতিল ঘোষণা করে উনার যিনি হাবীব, যিনি কুল-কায়িনাতের নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েতকারী, সাক্ষ্যদানকারী, সতর্ককারী, সুসংবাদদানকারী হিসেবে দ্বীন ইসলাম দিয়ে, পবিত্র কুরআন শরীফ দিয়ে, পবিত্র হাদীছ শরীফ দিয়ে যমীনে পাঠিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে সম্মানিত ইসলাম।”
অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলামই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট একমাত্র মনোনীত, হক্ব, পরিপূর্ণ ও সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত দ্বীন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম।” (পবিত্র সূরা মায়েদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে- “একদিন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ইহুদীদের থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, এর কিছু আমরা লিখে রাখবো কি? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারাও কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন? যে রকম ইহুদী-নাছারারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি আপনাদের নিকট আপনাদের জন্য পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার পবিত্র দ্বীন নিয়ে এসেছি। হযরত মুসা কালীমিল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও যদি এখন দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে উনাকেও আমার অনুসরণ করতে হতো।” সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ সম্মানিত ইসলামে যা বলা আছে তার বাইরে কারো কোনো মত-পথ গ্রহণযোগ্য নয়। তার মানে বিডি-প্রতিদিন নামক যে পত্রিকা অন্য মুসলিম দেশের উদাহরণ দিয়েছে, তা পবিত্র দ্বীন ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। সম্মানিত শরীয়তের বাইরে গিয়ে যে যা-ই করুক, তা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দলীল নয়।
অতএব, দেশ বা সমাজ কিংবা ব্যক্তি বা সমষ্টির উদাহরণ দিয়ে হারামকে যারা জায়িয প্রমাণ করতে চায় তারা দাজ্জালে কাযযাব, জাহেল, গ-মূর্খ, বকলম।